পুরোনো বটগাছের ছায়া

একটি ছোট গ্রামে, নদীর ধারে একটি পুরোনো বটগাছ ছিল। গ্রামের লোকেরা বলত, এই গাছের নিচে কখনো যেও না, বিশেষ করে পূর্ণিমার রাতে। কারণ সেখানে বাস করে একটি ভূত, যার নাম "কালো ছায়া"। এই ভূতটি ছিল একজন পুরোনো জমিদারের আত্মা, যিনি তার জীবদ্দশায় অনেক অত্যাচার করেছিলেন। মৃত্যুর পর তার আত্মা এই বটগাছের সাথে বাঁধা পড়ে গিয়েছিল।

রাহুল নামে একটি ছেলে গ্রামে এসেছিল তার দাদার বাড়িতে বেড়াতে। সে এই গল্প শুনে হেসে উড়িয়ে দিয়েছিল। "ভূত-টুত কিছু হয় না, আমি দেখব এই বটগাছের নিচে কী আছে!" বলে সে পূর্ণিমার রাতে বটগাছের দিকে রওনা দিল।

রাত তখন গভীর। চাঁদের আলোয় বটগাছের ছায়া লম্বা হয়ে পড়েছিল। রাহুল গাছের নিচে পৌঁছে দেখল, সেখানে একটি পুরোনো ভাঙা পুতুল পড়ে আছে। সে পুতুলটি তুলে নিতেই হঠাৎ একটা ঠান্ডা হাওয়া বইতে শুরু করল। গাছের পাতাগুলো কাঁপতে লাগল, আর একটা কালো ছায়া ধীরে ধীরে গাছের গুঁড়ি থেকে বেরিয়ে এল।

ছায়াটি রাহুলের দিকে এগিয়ে আসতে লাগল। তার চোখ দুটো জ্বলছিল লাল আগুনের মতো। রাহুল ভয়ে পিছিয়ে যেতে গিয়ে হোঁচট খেয়ে পড়ে গেল। ছায়াটি বলল, "তুই আমার জায়গায় এসেছিস, এখন তুই আমার সঙ্গী হবি!" রাহুল চিৎকার করে দৌড় দিল, কিন্তু পিছনে তাকিয়ে দেখল, কালো ছায়াটি তার পিছু নিয়েছে।

গ্রামের মানুষ পরদিন সকালে এসে দেখল, বটগাছের নিচে শুধু রাহুলের জুতো জোড়া পড়ে আছে। তারপর থেকে গ্রামের লোকেরা আর কেউ সেই বটগাছের কাছে যায় না।

Post a Comment

0 Comments